দুই দলই পেল সমাবেশের অনুমতিঃ এজন্য মানতে হবে কিছু শর্ত

শর্ত মেনেই দুই দলকে আলাদা আলাদা ভেন্যুতে সমাবেশ করতে হবে।

দুই দলই পেল সমাবেশের অনুমতিঃ এজন্য মানতে হবে কিছু শর্ত
ছবি-ক্রাইম ডায়রি

শর্ত মেনেই দুই দলকে আলাদা আলাদা ভেন্যুতে সমাবেশ করতে হবে

মহানগর সংবাদদাতাঃ

মহা জল্পনা কল্পনার পর শুক্রবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি  কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক আজ বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তবে সমাবেশ করতে হলে ২৩ টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে ডিএমপি। এসব শর্ত মেনেই দুই দলকে আলাদা আলাদা ভেন্যুতে সমাবেশ করতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, দুই দলকে ২৩টি শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দলগুলো আবেদন অনুযায়ী, পছন্দের স্থানে সমাবেশ আয়োজন করতে পারবে। তবে তাদের সমাবেশের জন্য এলাকার সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির জন্য নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতাল পর্যন্ত  সীমানা। আওয়ামী লীগের সহযোগী তিন দলের জন্য মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দুই দলকেই সমাবেশের অনুমোদিত এলাকার ভেতরে মাইক স্থাপন করতে হবে।

ডিএমপির কমিশনারের পক্ষে বিশেষ সহকারী সৈয়দ মামুন মোস্তফা স্বাক্ষরিত লিখিত স্মারকে বলা হয় নিম্মরুপ শর্তসাপেক্ষে উভয় দল আয়োজন করতে পারে:

১. এ অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। 

২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রের উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

৩. অনুমোদিত স্থানেই মহাসমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

৪. কোনো অবস্থাতেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে কোনো ধরনের জনসমাগম করা যাবে না। 

৫. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।

৬. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী-নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মহাসমাবেশস্থলের চারদিকে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মহাসমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মহাসমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৯. শব্দদূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনোক্রমেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

১০. অনুমোদিত স্থানের বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।

১১. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

১২. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে- এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য দেওয়া বা প্রচার করা যাবে না।

১৩. মহাসমাবেশের কার্যক্রম ছাড়া মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

১৪. মহাসমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।

১৫. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা) মহাসমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

১৬. কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

১৭. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়-এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।

১৮. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ বা বক্তব্য দেওয়া যাবে না।

১৯. উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

২০. কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।

২১. আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

২২. উল্লিখিত শর্তাবলি পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এ অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।

২৩. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এ অনুমতির আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।

ক্রাইম ডায়রি / আইনশৃংখলা