গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা পোষ্টম্যানঃ পোষ্টঅফিস ঘেরাও

সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিসে গত মাসে ৩ লাখ টাকা জমা রাখতে গেলে পোস্ট অফিসের পল্লী কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড (নগদ) সংস্থায় টাকা রাখলে সরকার এক লাখে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে লাভ দিচ্ছে বলে পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল আমার কাছ থেকে টাকা নেন। এ সময় তিনি আমাকে পল্লী কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড নগদ এর একটি টোকেন হাতে দেন। একই ধরনের অভিযোগ করেন এলাকার অনেক মানুষ। 

গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা পোষ্টম্যানঃ পোষ্টঅফিস ঘেরাও

গ্রাহকদের অভিযোগ, সাগরকান্দি ইউনিয়নের পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের যোগসাজশে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল। প্রতারণার শিকার স্থানীয় গ্রামের প্রদীপ নামে এক গ্রাহক সাংবাদিকদের জানান, সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিসে তিনি তার জমানো ৮ লাখ টাকা রাখতে গেলে পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল আমাকে বলেন, নগদে টাকা রাখলে লাভ বেশি।

পাবনা জেলা প্রতিনিধিঃ

পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিস। এলাকাবাসী আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক এই পোষ্ট অফিসে নগদ-এর নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা।   পোস্ট অফিসের পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল সেই টাকা আদায় করে জায়গা মতো জমা না দিয়ে পলাতক হয়েছেন।।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত বকুলের বাড়ি জেলার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রামে। প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। খবর পেয়ে পাবনা প্রধান ডাকঘরের কর্মকর্তারা গিয়ে প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের টাকা পোস্টম্যান নূর হোসেনের কাছ থেকে আদায় করে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। এক সপ্তাহ ধরে বকুল পলাতক রয়েছে। এখন পর্যন্ত সেই অর্থ ফেরত না পাওয়ায় প্রতিদিন সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিসের সামনে ভীড় করছেন প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা।

গ্রাহকদের অভিযোগ, সাগরকান্দি ইউনিয়নের পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের যোগসাজশে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল। প্রতারণার শিকার স্থানীয় গ্রামের প্রদীপ নামে এক গ্রাহক সাংবাদিকদের জানান, সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিসে তিনি তার জমানো ৮ লাখ টাকা রাখতে গেলে পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল আমাকে বলেন, নগদে টাকা রাখলে লাভ বেশি।

এ জন্য সরকার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে ডিজিটাল সেবা দেওয়ার জন্য পোস্ট অফিসের পাশাপাশি পল্লী কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড রেজি. নং-সি-৫৩৬৭৭(৩৪২)২০০৪ (নগদ) নামে সরকার আরেকটি সংস্থা চালু করছেন। তাদের সেই কথা সত্যি ভেবে সরল বিশ্বাসে আমি তাদের হাতে টাকা দিয়েছিলাম। এ সময় পোস্ট অফিস থেকে পোস্ট অফিসের লোগোযুক্ত একটি টাকা জমা ও তোলার জন্য নগদ-এ মার্চেন্ট নামক একটি পাশ বই দেন। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের একজন  মানিক মোল্লা। তিনি স্থানীয় বেশ কয়েক জন সাংবাদিককে বলেন, সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিসে গত মাসে ৩ লাখ টাকা জমা রাখতে গেলে পোস্ট অফিসের পল্লী কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড (নগদ) সংস্থায় টাকা রাখলে সরকার এক লাখে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে লাভ দিচ্ছে বলে পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল আমার কাছ থেকে টাকা নেন। এ সময় তিনি আমাকে পল্লী কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড নগদ এর একটি টোকেন হাতে দেন। একই ধরনের অভিযোগ করেন এলাকার অনেক মানুষ। 

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্থানীয়  সাগরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যান মোঃ শাহীন চৌধুরী মঙ্গলবার ক্রাইম ডায়রিকে বলেন, বেশ  কয়েক দিন আগে ভুক্তভোগীরা ইউনিয়নের সাব পোস্ট অফিসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানতে পারি।  স্থানীয় লোকজন আমাকে জানিয়েছেন, পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের যোগসাজশে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল। এ ঘটনার পর পরই সাগরকান্দি সাব পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে সাতবাড়িয়া সাব পোস্ট অফিসে এবং সাতবাড়িয়া সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার রফিকুল ইসলামকে সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিসে বদলি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

নতুন বদলী হয়ে আসা পোষ্টমাষ্টার রফিকুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পোস্টম্যান নূর হোসেন বকুল কোথায় আছে তিনি জানেন না। তবে গ্রাহকের জমা বই হাতে নিয়ে বলেন, এসব বহি ডাক বিভাগের না। গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য নূর হোসেন বকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন অভিযুক্ত পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবী পোষ্ট মাষ্টার আর তিনি পাশাপাশি বসেন এতটাকা লেনদেন হচ্ছে আর তিনি জানতে পারছেন না এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।

পাবনা জেলার ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা শিকার করে স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, সাগরকান্দি সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও পোস্টম্যান মোহাম্মদ নূর হোসেন বকুল পল্লী কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড নগদ-এর জমা বই  ছাপিয়ে স্থানীয় গ্রাহকদের নিকট হতে প্রতি লাখে এক হাজার টাকা লাভ দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে বলে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কাছ থেকে। তবে পোস্ট অফিসের সঙ্গে পল্লী কুরিয়ার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড নগদ-এর কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।

গ্রাম এলাকার সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করায় হতাশ সুশীর সমাজ। দেশের অন্যান্য এলাকার মানুষকেও এসব বিষয়ে সতর্ক। থাকার পরামর্শ  দেন এখানকার প্রতারিত জনগন। জানা গেছে এ বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ডাক বিভাগ।। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা ডাক বিভাগ সুত্রে জানা গেছে।

ক্রাইম ডায়রি//ক্রাইম