টাঙ্গাইলের সেই অর্থ আত্বসাৎকারী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে

Action is being taken against the principal of Tangail who embezzled that money

টাঙ্গাইলের সেই অর্থ আত্বসাৎকারী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
ছবি-ক্রাইম ডায়রি

সম্মানিত জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি সভাপতি হিসেবে তার বিরুদ্ধে দুদকে পত্র লিখব। দুদক তদন্তপূর্বক বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ক্রাইম ডায়রি অনলাইন ডেস্কঃ

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ডিগ্রি কলেজের রেজুলেশন খাতাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অধ্যক্ষের বাড়িতে থাকায় সভা বাতিল করে চলে গেলেন জেলা প্রশাসক। সোমবার কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি কলেজে আয়োজিত সভা বাতিল করেন।
 
সভায় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. ওলিউজ্জামান, দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহাসান আলী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুচি রাণী সাহাসহ পরিচালনা পরিষর্দসের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  
 দৈনিক যুগান্তরে ‘দেলদুয়ারে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ডিগ্রি কলেজ, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হবার পর জেলা প্রশাসক স্বশরীরে গিয়ে অনিয়ম দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন।

পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, দীর্ঘদিন যাবত অধ্যক্ষ কলেজের সভা ডাকেন না। পরে তিনি (জেলা প্রশাসক) উদ্যোগ নিয়ে সভা ডাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অধ্যক্ষের মাধ্যমে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভার আয়োজন করা হয়েছিল। পরিচালনা পরিষদের সব সদস্যের উপস্থিতিতে গত সভার কার্যবিবরণী চাওয়া হলে অধ্যক্ষ মো. লোকমান হোসেন জানান, তিনি কোনো কাগজপত্র আনেননি। কারণ জানতে চাইলে অধ্যক্ষ জানান, কাগজপত্র তার বাড়িতে। কলেজের কাগজপত্র বাড়িতে থাকার বিষয়ে অধ্যক্ষ জানান, সেই কারণ তো তিনি জানেন না। 

জেলা প্রশাসক আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে কলেজের হিসাবে গরমিল থাকায় তিনি কাগজপত্র উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি সভাপতি হিসেবে তার বিরুদ্ধে দুদকে পত্র লিখব। দুদক তদন্তপূর্বক বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
 
কলেজের শিক্ষকরা জানান, কলেজের পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ৮ মে একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আহসান হাবিব, কারিগরি শাখার সহকারি অধ্যাপক মো. হযরত আলী ও প্রভাষক মো. আশরাফ হোসেনকে অডিট কমিটির সদস্য করা হয়। গত ২ জুন অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি তাদের প্রতিবেদন অধ্যক্ষ বরাবর দাখিল করেন।
 
প্রতিবেদন উল্লেখ রয়েছে, গত তিন বছরের অধ্যক্ষ এক কোটি ৬৬ লাখ ১৬ হাজার ২২৬ টাকার মধ্যে এক কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ২৮৬ টাকা চেকের মাধ্যমে খরচ করেছেন। অপরদিকে তিনি সভাপতিকে অবগত না করে সেখানে ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪০ টাকার নগদে খরচ করেছে। কিন্তু নগদে খরচ করার কোনো নিয়ম নেই বলে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটির প্রতিবেদন উল্লেখ করেছেন। চেকের মাধ্যমে এক কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ২৮৬ টাকা খরচ করেছেন।

সেখানে শিক্ষকের বাড়ি ও উৎসব ভাতা বাবত ৮৭ লাখ ৩৭ হাজার ৪৯৮ টাকার খরচ সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলেও বাকি প্রায় ২৫ লাখ টাকার সুনির্দিষ্ট কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। এটা নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তার অনুগত শিক্ষক দ্বারা গঠিত নিরীক্ষা কমিটির প্রতিবেদনেই এই অনিয়ম। যদি সঠিক তদন্ত করা হয় তাহলে অনিয়মের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন। 

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. লোকমান হাসানকে গণমাধ্যম কর্মীরা ফোন দিলে তিনি বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। তিনি ডিসির সাথে কথা বলেন বলে  ফোন কেটে দিয়ে সুইচড অফ করে দেন।

ক্রাইম ডায়রি/ক্রাইম /জনস্বার্থে প্রকাশিত