প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রদান বাধ্যতামূলকঃ গড়িমসি করলে বিভাগীয় মামলা

অসম্ভব সম্পদের মালিক হয়ে অনেক ছোটছোট সরকারী কর্মচারীদের অনেকে বছরের ব্যবধানে চাকরীও ছেড়েছেন। আবার অনেক রাঘব বোয়ালরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে এখন চাকরী হতে স্বেচ্ছা অবসরে গেছেন নয়তো ব্যাংক  এড়িয়ে টাকা লগ্নি করেছেন বিভিন্ন ধরনের কোম্পানীতে। ডিসেম্বরের মধ্যে বিগত ৫ বছরের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে হবে।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রদান বাধ্যতামূলকঃ গড়িমসি করলে বিভাগীয় মামলা
অসম্ভব সম্পদের মালিক হয়ে অনেক ছোটছোট সরকারী কর্মচারীদের অনেকে বছরের ব্যবধানে চাকরীও ছেড়েছেন। আবার অনেক রাঘব বোয়ালরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে এখন চাকরী হতে স্বেচ্ছা অবসরে গেছেন নয়তো ব্যাংক  এড়িয়ে টাকা লগ্নি করেছেন বিভিন্ন ধরনের কোম্পানীতে। এমন অনেক শুল্ক,ভ্যাট গোয়েন্দা,পুলিশ কর্মকর্তা, বীমাবিদ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রজাতন্ত্রের বৃহৎ রাঘববোয়ালের ইতিহাস কে না জানে। যদি তাদের অনেকেই স্বেচ্ছায় সাবেক হয়েছেন নয়তো আড়ালে আবডালেই থাকেন। এমন অনেকের তথ্য প্রমাণের পরিপূর্ন ডাটা,রেকর্ড(অডিও,ভিডিও,নথি) এখন টিম ক্রাইম ডায়রি সহ একাধিক গণমাধ্যমের হাতে এসে পৌছেছে।
শাহীন আলম,বিশেষ সংবাদদাতাঃ
সোনার বাংলা গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর মেকানিজমই শেষমেষ টেকসই প্রমাণিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তার অনেক ভাষনে সোনার বাংলা গড়ার জন্য সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের সততার সাথে জীবন যাপন ও সততার সাথে কাজ করার তাগিদ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক ও বাহক বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা দুর্নীতি রোধে এতটাই আন্তরিক যে তিনি নিজদলের দুর্নীতি উচ্ছেদের মাধ্যমেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রথম সোচ্চার হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি ৫ বছর অন্তর সম্পদবিবরণী জমা দিতেই হবে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অসম্ভব সম্পদের মালিক হয়ে অনেক ছোটছোট সরকারী কর্মচারীদের অনেকে বছরের ব্যবধানে চাকরীও ছেড়েছেন। আবার অনেক রাঘব বোয়ালরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে এখন চাকরী হতে স্বেচ্ছা অবসরে গেছেন নয়তো ব্যাংক  এড়িয়ে টাকা লগ্নি করেছেন বিভিন্ন ধরনের কোম্পানীতে। এমন অনেক শুল্ক,ভ্যাট গোয়েন্দা,পুলিশ কর্মকর্তা, বীমাবিদ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রজাতন্ত্রের বৃহৎ রাঘববোয়ালের ইতিহাস কে না জানে। যদি তাদের অনেকেই স্বেচ্ছায় সাবেক হয়েছেন নয়তো আড়ালে আবডালেই থাকেন। এমন অনেকের তথ্য প্রমাণের পরিপূর্ন ডাটা,রেকর্ড(অডিও,ভিডিও,নথি) এখন টিম ক্রাইম ডায়রি সহ একাধিক গণমাধ্যমের হাতে এসে পৌছেছে।
তাই বঙ্গকন্যার এমন নির্দেশনা প্রজাতন্ত্রের  অগনিত সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনে আশা জাগিয়েছে। তারা চান সবার সম্পদ বিবরনী জমা  দেওয়ার পর তা যাচাই করে দেখা হোক।  সুত্রে জানা গেছে, কেউ এ নির্দেশনা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
এজন্য মনিটরিং ও যাচাইয়ের ক্ষমতা দিয়ে কর্মচারী (আচরণ) বিধি ১৯৭৯ সংশোধন করা হচ্ছে। একইসঙ্গে বিধিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করাসহ আরও বেশ কিছু সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগ কার্যক্রম শুরু করেছে।
Accounting for the assets of Republic employees is mandatory: Departmental case if delayed

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯’ এবং এ সংক্রান্ত একাধিক বইয়ের লেখক সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, নতুন করে বিধি সংশোধনের প্রয়োজন ছিল না। কেননা, সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধি ১৯৭৯-এর বিধি ৩২ নম্বরে স্পষ্টভাবে বলা আছে, এ বিধির কোনো কিছু কোনো কর্মচারী লঙ্ঘন করলে সেটি অসদাচরণের অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। ফলে সম্পত্তির ঘোষণা সংক্রান্ত ১৩নং বিধি লঙ্ঘন করে কেউ যদি প্রতি ৫ বছর অন্তর তার নিজের এবং তার ওপর নির্ভরশীল প্রত্যেকের সম্পত্তির হিসাব জমা না দেন সেটিও মিসকন্ডাক্ট বা অসদাচরণ হিসাবে গণ্য হবে। এ অপরাধে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএফএম হায়াতুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ২৪ জুন এ বিষয়ে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি নতুন কিছু নয়। অনেকে সম্পদবিবরণী জমা দেন না। তিনি মনে করেন, আচরণবিধি উপেক্ষা করার সুযোগ কারও নেই। তাই প্রতি ৫ বছর অন্তর প্রত্যেক গণকর্মচারীকে সম্পদবিবরণী জমা দিতেই হবে। তিনি জানান, হয়তো এ বিষয়ে শিগগির আরও একটি তাগিদপত্র পাঠানো হতে পারে।

 রিটার্ন জমা দেওয়া হয় আয়কর আইনের অধীনে। সেখানে শুধু যিনি রিটার্ন জমা দেন তার আয় দেখানো হয়। কিন্তু সম্পত্তির হিসাব জমা দেওয়ার বিধান সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি ১৯৭৯-এর অধীনে। এটি করা হয়েছে কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য। এছাড়া এখানে একজন সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী সম্পত্তির ঘোষণা কিংবা সম্পদবিবরণী জমা দেওয়ার সময় স্ত্রী সন্তানসহ তার ওপর নির্ভরশীল প্রত্যেকের সম্পদবিবরণীও দিতে হয়।

৫ বছরের মধ্যে যেসব সম্পদের বৃদ্ধি ঘটবে তার উৎস সম্পর্কে ব্যাখ্যাও দিতে হবে। ফলে রিটার্ন জমা দেওয়ার সঙ্গে সম্পদবিবরণী জমা দেওয়াকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। দুটো ভিন্ন বিষয়। তাছাড়া বার্ষিক রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় অনেকে অবৈধ পথে অর্জিত অর্থ নানা পন্থায় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বৈধ করে থাকেন। সেটি কিন্তু সরকারি কর্মচারী বিধির অধীনে জোড়াতালি দিয়ে বৈধ করা সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষ চাইলে শক্তভাবে যাচাই করে দুর্নীতির বিষয়টি চিহ্নিত করতে পারবে।

১৯৭৯ সালে প্রণীত এ সংক্রান্ত বিধিতে প্রতি বছর সম্পদের হিসাব দাখিল করার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু সেটিও ওইভাবে কেউ প্রতিপালন করতেন না। এর আগে প্রথমে ছিল চাকরিতে প্রবেশের সময় প্রত্যেককে তার সম্পদবিবরণী জমা দিতে হতো। পরে ২০০২ সালের এসে এতে সংশোধনী এনে প্রতি বছরের স্থলে ৫ বছর অন্তর ডিসেম্বরে সম্পদবিবরণী জমা দেওয়ার বিধান প্রবর্তন করা হয়। কিন্তু সবকিছু কাগুজে বিধিমালায় পরিণত হয়। বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ ছিল না। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ বিষয়ে কড়া নির্দেশনা জারি করাসহ এ সংক্রান্ত নির্ধারিত ফরম প্রকাশ করা হয়। ওই সময়ে অনেকে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে সম্পদবিবরণী জমা দেওয়া শুরু করেন। প্রথমদিকে প্রশাসন ক্যাডারের কয়েকশ কর্মকর্তা জমা দেন। স্থান সংকুলান না হওয়ায় এসব হিসাবের নথিপত্র সংরক্ষণ করতে বেশ কয়েকটি নতুন আলমারিও কেনা হয়।

কয়েকটি ফাইল যাচাই করে বড় ধরনের কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে। দেখা যায়, প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক হলেও সেটি তিনি আয়কর রিটার্নে দাখিল করেননি। দুদকের ভয়ে সম্পদবিবরণীতে উল্লেখ করেন। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আবেদন করে এসব সস্পদ অর্জনের বিষয়ে ভূতাপেক্ষ অনুমোদন নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কিছুদিন না যেতে সব কিছুতে ভাটা পড়ে যায়। আসলে সর্ষের মাঝে ভূত ধরা পড়ার কারণে পরে সম্পদবিবরণী জমা দেওয়া নিয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তারা পিছু হটেন বলে মনে  করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে অনেক সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেক কষ্ট করে চলে সম্পদ অর্জন করেন সে বিষয়টিও মাথায় রাখার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, অনেকে পাশাপাশি পারিবারিক নানা ধরনের ব্যবসা কিংবা কৃষি কাজের মাধ্যমেও সম্পদ অর্জন করতে পারেন।

ক্রাইম ডায়রি///জাতীয়