পাহাড়ি ঢলে বন্যা: শতাধিক পর্যটক সাজেকে আটকা

কোনো যানবাহন সাজেকের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি এবং সাজেক থেকেও কোনো প্রকার যানবাহন ছেড়ে আসতে পারেনি। ফলে সাজেকে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা আটকা পড়েছেন।

পাহাড়ি ঢলে বন্যা: শতাধিক পর্যটক সাজেকে আটকা
ছবি-ক্রাইম ডায়রি

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সড়ক ও বাঘাইছড়ির বাঘাইহাট বাজার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সাজেকে বেড়াতে যাওয়া শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পানি নামতে শুরু করলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে। তখন তারা ফিরতে পারবেন।

রাঙ্গামাটি সংবাদদাতা:

পাহাড়ি ঢলে পাহাড়ে বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।  টানা কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করছেন স্থানীয়রা। পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নিচু এলাকা পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। পাহাড়ি সড়কের ওপর পানি উঠে তলিয়ে গেছে বাঘাইছড়ি-বাঘাইহাট-সাজেক সড়ক ও বেইলি ব্রিজ।

বাঘাইছড়ি ও সাজেকের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় শতাধিক পর্যটক সাজেকে আটকা পড়েছেন বলে  প্রশাসন ও স্থানীয়রা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা জানিয়েছেন,  মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে পাহাড়ি ঢল নামায় বাঘাইছড়ির বাঘাইহাটবাজারে সড়ক এবং বেইলি ব্রিজ তলিয়ে সাজেকের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকালে বাঘাইহাট থেকে কোনো যানবাহন সাজেকের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি এবং সাজেক থেকেও কোনো প্রকার যানবাহন ছেড়ে আসতে পারেনি। ফলে সাজেকে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা আটকা পড়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাজেকভ্যালির কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি অনিত্য ত্রিপুরা জানান, গত কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে সাজেক বাঘাইহাট সড়কে পাহাড়ি ঢলের পানি উঠে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে সাজেক পর্যটনভ্যালিতে শতাধিক পর্যটক আটকে পড়েছেন।

সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান খান জানান, গত কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সাজেক ইউনিয়নের মাচালং বাজার ও বাঘাইহাট এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকভ্যালিতে প্রায় শতাধিক পর্যটক আটকে পড়েছেন।

এদিকে কয়েক দিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাতে বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর, মারিশ্যা, বারেবিন্দুঘাট, লাল্যাঘোনা, মুসলিমপাড়া, এফ ব্লক, উলছড়িসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে ওইসব এলাকার মানুষ। দুর্গতদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার বলেন, টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সড়ক ও বাঘাইছড়ির বাঘাইহাট বাজার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সাজেকে বেড়াতে যাওয়া শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পানি নামতে শুরু করলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে। তখন তারা ফিরতে পারবেন।

তিনি জানান, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। দুর্গত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান বলেন, ৩টি চাঁদের গাড়ি নিয়ে প্রায় শতাধিক পর্যটক বেড়াতে গিয়ে মঙ্গলবার সকালে সাজেকে আটকে পড়েছেন। সাজেক-ভায়া দীঘিনালা সড়কের বেশ  কয়েকটি স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানি উঠেছে। যেসব মিডিয়া ৫-৭শ পর্যটক সাজেকে আটকে পড়ার খবর প্রচার করছে তারা আমার সঙ্গে কথা না বলে ভুল তথ্য পরিবেশ করছেন। এটা দুঃখজনক। আমি একটু আগেও সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতি ও বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। সঠিক সংবাদ প্রচার করার বিষয়ে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ক্রাইম ডায়রি/জেলা