বদলে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি: রাফা সীমান্তে মিসর-ইসরাইলের গুলিবিনিময়

মিসরীয় সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, মিসরীয় বাহিনী রাফা সীমান্তে গুলিবর্ষণের ঘটনা তদন্ত করছে।

বদলে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি: রাফা সীমান্তে মিসর-ইসরাইলের গুলিবিনিময়
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

প্রকৌশলী আয়াতুস সাইফ মুন, মালয়েশিয়া হতে:
অবশেষে বদলে যেতে শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি। গাজা উপত্যকার রাফা ক্রসিংয়ে মিসরীয় ও ইসরাইলি সৈন্যদের গুলি বিনিময়ে অন্তত একজন নিহত হয়েছে। নিহত সৈন্যটি মিসরীয়। তবে মিসরীয়দের হামলায় অন্তত সাত ইসরাইলি সৈন্য আহত হয়েছে বলে অসমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান উত্তেজনাকর পরিবেশে এই ঘটনা সার্বিক পরিবেশের আরো অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, মিসরীয় সৈন্যরাই প্রথমে তাদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে। তারা পাল্টা জবাব দিয়েছে। ইসরাইলি মিডিয়া ওয়াইনেটের খবরে বলা হয়, গুলিতে এক মিসরীয় সৈন্য নিহত হয়েছে, আরো কয়েকজন আহত হয়েছে।

মিসরীয় সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, মিসরীয় বাহিনী রাফা সীমান্তে গুলিবর্ষণের ঘটনা তদন্ত করছে। তিনি একজনের মৃত্যুর খবরও স্বীকার করেছেন। প্রাথমিক খবরে জানা গেছে, প্রথম গোলাগুলির পর ইসরাইলি বাহিনী ঘটনাটি অস্বীকার করে। তবে পরে আবার তারা তা স্বীকার করে। এই ঘটনা বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আরো জটিল করে তুলতে পারে। ইসরাইলের সাথে মিসরের শান্তিচুক্তি থাকলেও রাফা ক্রসিং নিয়ে তাদের মধ্যে মতানৈক্য চলছে। হামাস যে শান্তিচুক্তিটি গ্রহণ করেছিল, তা ইসরাইলকে না জানিয়েই বদলে দিয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাছাড়া ইসরাইলি বাহিনী রাফা ক্রসিংয়ে মোতায়েন করার পর সেখান দিয়ে ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছি মিসর।

তবে বিশ্লেষকরা দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা আরো বাড়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তবে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় মিসর মধ্যস্ততাকারী হওয়ায় বিষয়টি জটিল করে তুলবে। চীন-আরব রাষ্ট্র সহযোগিতা ফোরামে যোগ দিতে চার আরব নেতা বেইজিংয়ে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। সোমবার এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান চীনের দশম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

সূত্রে জানা গেছে, নেতারা মঙ্গলবারে বেইজিং পৌঁছাবেন এবং শনিবার পর্যন্ত অবস্থান করবেন। বৃহস্পতিবার ফোরামের বৈঠক হবে। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও উপস্থিত থাকবেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং তার মৌরিতানিয়ার প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ সালেম উলদ মারজুক সম্মেলনের সহ-সভাপতিত্ব করবেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রতিনিধিরা এবং লীগ অব আরব স্টেটসের মহাসচিব সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সঙ্ঘাত নিরসনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে চাইছে চীন। এমন প্রেক্ষাপটে বেইজিংয়ে আরব নেতাদের এই সম্মিলন হতে যাচ্ছে। চীন ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তারা দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সমর্থনকারী। চলমান সঙ্ঘাত নিরসনের লক্ষ্য একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আহ্বান করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে চীন-আরব রাষ্ট্র সহযোগিতা ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়। ফোরামটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রাথমিক বহুপাক্ষিক সমন্বয় প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করার জন্য চীন এবং আরব লীগের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক সংলাপের উদ্যোগ হিসেবে কাজ করে।

ক্রাইম ডায়রি/ আন্তর্জাতিক//  সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল, আনাদোলু এজেন্সি