অনলাইন শপে নিষিদ্ধ যৌণ উদ্দীপক সামগ্রী বিক্রয়ঃ সিআইডি’র হাতে আটক ৬

Prohibition of sale of sexually arousing material in online shops: 6 arrested by CID

অনলাইন শপে নিষিদ্ধ যৌণ উদ্দীপক সামগ্রী বিক্রয়ঃ সিআইডি’র হাতে আটক ৬
গ্লাস একটাই। তাতে মদ খাওয়া যায়, জীবন রক্ষাকারী পানি ‍কিংবা ঔষধ পান করা  যায়, জান্নাতি খাবার দুধ পান করা  যায় আবার জীবন ধ্বংসকারী বিষও পান করা যায়। ডিজিটাল মাধ্যমে মানুষ ওয়াজও শোনে আবার অসাধারন প্রাকৃতিক দৃশ্য কিংবা মুভি দেখে মহান আল্লাহ তায়ালার নাম ও স্মরণ করে। আবার যৌণতায় ভরপুর মুভি কিংবা দৃশ্য দেখে কুপথেও পা বাড়ায়। মানুষ যত ডিজিটালাইজেশন এর দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশও তত   এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ শিখছে ,জানছে আবার সুপথের পাশাপাশি কুপথেও আগ্রহ দেখাচ্ছে। সম্প্রতি সেক্সটয় দিয়ে যৌণ নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনায় টনক নড়েছে দেশমাতৃকাকে রক্ষার অদম্য শপথে বলিয়ান প্রশাসনের।
কালিমুল্লাহ দেওয়ান রাজাঃ
গ্লাস একটাই। তাতে মদ খাওয়া যায়, জীবন রক্ষাকারী পানি ‍কিংবা ঔষধ পান করা  যায়, জান্নাতি খাবার দুধ পান করা  যায় আবার জীবন ধ্বংসকারী বিষও পান করা যায়। ডিজিটাল মাধ্যমে মানুষ ওয়াজও শোনে আবার অসাধারন প্রাকৃতিক দৃশ্য কিংবা মুভি দেখে মহান আল্লাহ তায়ালার নাম ও স্মরণ করে। আবার যৌণতায় ভরপুর মুভি কিংবা দৃশ্য দেখে কুপথেও পা বাড়ায়। মানুষ যত ডিজিটালাইজেশন এর দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশও তত   এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ শিখছে ,জানছে আবার সুপথের পাশাপাশি কুপথেও আগ্রহ দেখাচ্ছে। সম্প্রতি সেক্সটয় দিয়ে যৌণ নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনায় টনক নড়েছে দেশমাতৃকাকে রক্ষার অদম্য শপথে বলিয়ান প্রশাসনের। তাই সম্প্রতি রাজধানীর পল্ল­বী থেকে অবৈধ উদ্দীপক সামগ্রী বিক্রেতা চক্রের মূল হোতাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম। জানা গেছে,  এরা ফেসবুক পেইজ ও নানা নামে ওয়েবসাইট চালু করে উদ্দীপক টয় সামগ্রীর বিজ্ঞাপন দিত। বিজ্ঞাপন দেখে  ক্রেতারা আকৃষ্ট হলে তাদের কাছে উচ্চমূল্যে এসব সামগ্রী বিক্রি করত চক্রের সদস্যরা। ত্রিশের উপর বয়সের যুবক -যুবতীরাই তাদের টার্গেট। তাছাড়া একাকি জীবন-যাপন করছেন এমন লোকজনও তাদের টার্গেট। 

আটককৃত ব্যক্তিরা হলো- চক্রের মূল হোতা মো. মেহেদী হাসান ভূইয়া ওরফে সানি (২৮), রেজাউল আমিন হৃদয় (২৭), মীর হিসামউদ্দিন বায়েজিদ (৩৮), সিয়াম আহমেদ ওরফে রবিন (২১), ইউনুস আলী (৩০), আরজু ইসলাম জিম (২২)। তাদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকার উদ্দীপক টয় সামগ্রী, ৫টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ ও ৯টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার ৬ জনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

রোববার সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান সাংবাদিকদের জানান, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেলের এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যায়। ময়নাতদন্তে জানা গেছে, বিকৃত যৌনাচারের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের সময় এক ধরনের ‘ফরেন বডি’ ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিমের নজরে আসলে এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়। 

অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, অনুসন্ধানে জানা গেছে- কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে দেশে নিষিদ্ধ উদ্দীপক বিভিন্ন পণ্যের ছবি এবং ভিডিওসহ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম এ ধরনের কয়েকটি ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। ওয়েবসাইটগুলো হচ্ছে- টিভিসি স্কাই শপ বিডি, স্কাই শপ বিডি, টিভিসি স্কাই শপ ও এশিয়ান স্কাই শপ আই। এসব ওয়েবসাইট ও পেজগুলো সম্পর্কে নিবিড় অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম। 

তিনি বলেন, অনুসন্ধানে আরও জানা যায়- এসব পণ্য বিক্রির আর্থিক লেনদেন হয় বিকাশ ও রকেটে।  তাছাড়া সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশ থেকে অবৈধ পণ্য আমদানির আড়ালে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে নিয়ে এসে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে। এসব সামগ্রীর বাজারমূল্য সম্পর্কে এ সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ১২ লাখ টাকার অবৈধ উদ্দীপক টয় সামগ্রী উদ্ধার করেছি। কিন্তু এগুলোর প্রকৃত মূল্য এর অর্ধেকের চেয়েও কম।  ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে এসব পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলছে। যেমন লাইকি, টিকটক ব্যবহার করে একটি ক্লোজড গ্রুপ তৈরি করে, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ডিজে পার্টির আড়ালে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চলছিল। 

অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান আরও বলেন, এই চক্রের কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে। ওই ওয়েবসাইটে যে কেউ প্রবেশ করলেই প্রলুব্ধ হয়ে যাবে। তবে তারা বিশেষত ত্রিশোর্ধ্ব একটি গ্রুপকে টার্গেট করে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করত। তাছাড়া একাকীত্ব জীবন-যাপন করছে যারা তারাও টার্গেট চক্রটির।  আমদানি নিষিদ্ধ এসব পণ্য দেশে আসার ক্ষেত্রে কাস্টমস দায় এড়াতে পারে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে অনুসন্ধান মাত্র শুরু করেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর শরীরে ফরেন বডির উপস্থিতি সম্পর্কে কীভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্ট এখনো চলছে এবং ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এখনো আসেনি। তবে ঘটনার পর ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন, ওই ছাত্রীকে নির্যাতন করার সময় সেক্সটয় ব্যবহার করা হয়েছিল। আর তাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে সে মারা গেছে।

ক্রাইম ডায়রি// ক্রাইম