আসুন সততা,নিষ্ঠা ও নির্মোহভাবে সবাই দায়িত্ব পালন করি--দুদক চেয়ারম্যান

Let us all fulfill our responsibilities with honesty, devotion and devotion - ACC Chairman

আসুন সততা,নিষ্ঠা ও নির্মোহভাবে সবাই দায়িত্ব পালন করি--দুদক চেয়ারম্যান

আতিকুল্লাহ আরেফিন রাসেলঃ

দুদক অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক মহা আতংকের নাম।সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে যার পরিধি এবং দেশ হতে কমতে শুরু করেছে অন্যায়। বিশেষ করে দুদকের স্বর্নযুগ শুরু হয়েছে চেয়ারম্যান ডক্টর ইকবাল মাহমুদের কারনে। নীতির উপর অবিচল ও দৃঢ়চেতা মানুষ তিনি। তার কন্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় দূর্নীতির বিরুদ্ধে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অনেক কথা। সম্প্রতি, দুদকের চেয়ারম্যান সময়ের সাহসী সৈনিক ডক্টর ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আসুন, সততা, নিষ্ঠা ও নির্মোহভাবে সবাই দায়িত্ব পালন করি। 

দুদক অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক মহা আতংকের নাম।সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে যার পরিধি এবং দেশ হতে কমতে শুরু করেছে অন্যায়। বিশেষ করে দুদকের স্বর্নযুগ শুরু হয়েছে চেয়ারম্যান ডক্টর ইকবাল মাহমুদের কারনে। নীতির উপর অবিচল ও দৃঢ়চেতা মানুষ তিনি। তার কন্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় দূর্নীতির বিরুদ্ধে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অনেক কথা। সম্প্রতি, দুদকের চেয়ারম্যান সময়ের সাহসী সৈনিক ডক্টর ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আসুন, সততা, নিষ্ঠা ও নির্মোহভাবে সবাই দায়িত্ব পালন করি। 

মহান বিজয় দিবস ২০২০ইং এর এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দুর্নীতি দমন কমিশনের  চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদ দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি এ আহবান জানান। 

আলোচনার প্রারম্ভেই দুদক চেয়ারম্যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদ, মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত মা-বোন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সকল শহিদ, কারাগারে নিহত জাতীয় চারনেতাসহ  জীবীত সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। তিনি সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

দুদক চেয়ারম্যান মাহমুদ বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেমন থাকবে, তা নির্ভর করছি আমরা অর্থাৎ বর্তমান প্রজন্ম কীভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছি তার ওপর। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন আত্ম-সমালোচনা, নিজের কাজকে বার বার ফিরে দেখা তথা আত্ম জিজ্ঞাসা। নিজেদের কাজের আত্মবিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে , হয়তো আরো অনেক কিছু করার ছিল, করতে পারিনি। আর যা করেছি - তা যদি টেকসই করতে হয়-তাহলে আমাদের সকলকে একই সমতলে দাঁড়াতে হবে। দুদকের সার্বিক কার্যক্রমকে টিমওয়ার্ক অবহিত করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সিপাহী থেকে চেয়ারম্যান প্রত্যেক-কেই নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবাই যদি সততা,নিষ্ঠা ও সুচারুরূপে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে দুদকের মাধ্যমে হয়রানি করা যায় কিংবা সরষের ভিতরেই ভুত রয়েছে । এ জাতীয় অপবাদ শোনা যাবে না।

তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন,  নিজেকে সর্বোচ্চ পরশিুদ্ধ রাখতে হবে। সম্পদের মোহাচ্ছন্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কোথাও কোথাও লেখা দেখি, “ সম্পত্তি খাবে লোকে, আর দেহ খাবে পোকে”। এমন কথা উদ্ধৃত করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যাদের জন্য সম্পদ রেখে যাবেন , তারা হয়তো এ সম্পদ ভোগও করতে পারবে না। এটাই সত্য। তাই নিজেদেরকে শুদ্ধতম মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুন। সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করুন। অবশ্যই এ সমাজ দুর্নীতির করালগ্রাস থেকে মুক্তি পাবে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করতে হবে। সমস্যা স্বীকার না করলে-সমাধান হবে কীভাবে ? আজ আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে, আমরা রাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ করবো না। যে কাজটি করবো, তা নির্মোহভাবে করবো। অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে পারে, তবে ইচ্ছাকৃত ভুল যেন না হয়। ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারি। তবেই তো কর্মপ্রক্রিয়া পরিশুদ্ধ হবে। শানিত হবে। 

বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমান তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতা বা বিবৃতিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেসব দীপ্ত উচ্চারণ করে গেছেন- তা বাস্তবায়নে দুদকের সকলস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বিত ও একই সমতল থেকে  দায়িত্ব পালনেরও আহবান জানান দুদক চেয়ারম্যান। 

 দুদক কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃচিারণ করে বলেন, সেদিন স্কুলের ছাত্র হিসেবে আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম, আমাদের মহান মাতৃভূমি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়বো। বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মহান নেতাই বৈষম্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে জাতিগতভাবে জাগিয়ে তুলেছিলেন।

তিনি বিভিন্ন পরসিংখ্যান উল্লেখ করে বলেন, একমাত্র জনসংখ্যা বৃদ্ধি ছাড়া পাকিস্তান সকল অর্থনৈকি-সামাজিক সূচকের ইতিবাচক অগ্রগতিতে বাংলাদেশের পিছনে রয়েছে। যদি দেশ স্বাধীন না হতো, হয়তো আমাদের আরও খারাপ পরিণতি হতো। 

দুদক কমিশনার ড. খান আরও বলেন, দুদক যে চেতনায় গঠিত হয়েছিল, ক্রমাগত প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সত্যিকার অর্থেই উন্নতির প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি। তাই আমাদেরকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে সরষের ভিতর যেন, ভূত না থাকে। তাই আসুন , মনন, চিন্তন ও আচরণে নিজ নিজ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করি।

দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম  মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাদের তখনকার আবাস ছিল নড়াইলে। এই মফস্বল শহরে ২৬ মার্চ সকালেই আমারা খবর পাই, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। আমরা তখন পাগলের মতো ছুটছিলাম-অস্ত্র সংগ্রহের জন্য। আমরা তৎকালীন এসডিপিওর কাছে অস্ত্রের জন্য ট্রেজারি খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানাই। তিনি আমাদের অনুরোধ রাখলেন না। এমন সময় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর নূর মোহাম্মদ লোহাগড়া থেকে নড়াইলে আসেন। তিনিও এসডিপিওকে অনুরোধ করলেন। কিন্ত তার কথাও এসডিপিও শুনলেন না। এমন সময় এই মহান শিক্ষক এসডিপিওর গালে কষে চড় মারলেন। এবং আমাদের ট্রেজারি ভেঙ্গে অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের নির্দেশ দিলেন। সরকারি ট্রেজারির অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে আমরা জাতির পিতার নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ অংশ নিয়ে ছিলাম। যুদ্ধের এক পর্যায়ে আমরা ভারতে চলে যাই। ভারতে যাওয়ার এক মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিয়ে দুদক কমিশনার বলেন, ভারত থেকে আবার যুদ্ধের তথ্য সংগ্রহের জন্য নড়াইলে ফিরে আসি। পথিমধ্যে পাক-আর্মির চেকে ধরা পড়ি। কিন্তু সৌভাগ্য আমাকে তারা চিহ্নিত করতে পারেনি। নিশ্চিত মৃত্যু  থেকে বেঁচে যাই। আজকের এই দিনে আমরা বিজয়ী হই। লাল-সবুজের পতাকায় পৃথিবীর প্রশংসিত একটি দেশ বাংলাদেশ। আমরা গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক মহাপরিচালক মোঃ জহির রায়হান, সাঈদ মাহবুব খান, একেএম সোহেল, পরিচালক মোঃ গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ মাহমুদ হাসান, দুদক সিলেট সজেকার উপপরিচালক মোঃ নূর-ই-আলম প্রমুখ।

ক্রাইম ডায়রি //সুত্রঃদুদক এফবি ওয়াল//জাতীয়