প্রায় দেড়কোটি নগদ লেনদেন অনুসন্ধানে গোয়েন্দা সংস্থা

পর্যালোচনায় রয়েছে সন্দেহজনক ৩৩০২ লেনদেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) এসব লেনদেন পর্যালোচনা ও যাচাইবাছাই করছে।

প্রায় দেড়কোটি নগদ লেনদেন অনুসন্ধানে গোয়েন্দা সংস্থা
সন্দেহজনক ৩৩০২ লেনদেনও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। নগদ লেনদেন তথ্য বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রেরণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। একইভাবে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) এসব লেনদেন পর্যালোচনা করছে।
শাহাদাত হোসেন রিটনঃ

অন্যায়ভাবে টাকা পাচার  রোধে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের এক কোটি ৩৪ লাখ নগদ লেনদেন অনুসন্ধানের আওতায় আনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) সুত্রে জানা গেছে,  আর ও সন্দেহজনক ৩৩০২ লেনদেনও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। নগদ লেনদেন তথ্য বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রেরণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। একইভাবে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) এসব লেনদেন পর্যালোচনা করছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম নিয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সচেতনতা আগের তুলনায় অনেকে বেড়েছে। যে কারণে তাদের নগদ ও সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্ট আগের তুলনায় অনেক বেশি আসছে বিএফআইইউতে। তিনি আরও বলেন, এসব লেনদেন পর্যালোচনা করার পর যেগুলোতে কোনো ধরনের সমস্যা পাওয়া যায় সেগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে প্রেরণ করা হয় আরও বিশদ অনুসন্ধানের জন্য। তবে সব নগদ লেনদেন যে খারাপ সেটিও নয়।  অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুদ্রা ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক বাজার উন্নয়নসংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

Intelligence agencies are investigating about one and a half crore cash transactions

বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এক কোটি ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৬৪৬টি ‘নগদ লেনদন’ রিপোর্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিএফআইইউতে পাঠানো হয়েছে। মূলত এসব হিসাবের মাধ্যমে কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনে এক বা একাধিক লেনদেনর মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা বা এর বেশি জমা বা উত্তোলন (অনলাইন, এটিএমসহ যেকোনো ধরনের নগদ জমা বা উত্তোলন) করা হয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নিজ উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিএফআইইউকে এসব লেনদেন সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এসব লেনদেন থেকে পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে কিনা এটি চিহ্নিত করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এসব নগদ লেনদেন পর্যালোচনা করে অধিক তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারীর সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, দেশ থেকে অর্থপাচারের ব্যাপারে হাজারের বেশি ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এসব প্রতিবেদন ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিআইডি এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫৮টি ঘটনা চিহ্নিত করে বিএফআইইউ। এ ছাড়াও ২০১৬-১৭ সালে ১২১টি, ২০১৭-১৮ সালে ৬৭৭টি, ২০১৮ সালে ৫২টি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১১৬টি ঘটনা চিহ্নিত করা হয়। এখন ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩০২টি সন্দেহজনক লেনদেন নিয়ে কাজ করছে। এরই মধ্যে পর্যালোচনা করে যেসব ঘটনা প্রয়োজন মনে করা হয়েছে সেগুলো তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ মূল্যায়ন ব্যবস্থা মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশনের চতুর্থ ফলোআপ রিপোর্ট গত নভেম্বরে প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে মনিটরিং এবং তথ্য পাওয়া এমন দুটি সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। এই রিপোর্টে দেখা গেছে, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ৪০টি শর্ত পূরণ করতে বাংলাদেশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। 

এদিকে নগদ লেনদেনের পাশাপাশি বিনিয়োগ করে কিংবা ফান্ড কালেকশন কিংবা উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান না হয়েছে অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে একধরনের প্রতিষ্ঠান বলে জানা গেছে।

ক্রাইম ডায়রি///জাতীয়