রংপুর ঢাকা মহাসড়কের জন্য গৃহীত জমির দাম বেশি পেতে রাতারাতি তৈরি হচ্ছে স্থাপনা ও মার্কেট

Establishments and markets are being set up overnight to get higher prices for the land acquired for the Rangpur-Dhaka highway

রংপুর ঢাকা মহাসড়কের জন্য গৃহীত জমির দাম বেশি পেতে রাতারাতি তৈরি হচ্ছে স্থাপনা ও মার্কেট

 

ঝোঁপ বুঝে, কোঁপ মার" প্রাচীন এই প্রবাদটির উৎপত্তি উত্তরাঞ্চল। আর এই উত্তরাঞ্চল হতেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে "ছয়লেন" রাস্তার পাশে অবস্থানকারী মানুষেরা। রাস্তার কাজ শুরু হবার বেশ আগ হতেই চাউর হয়েছিল যে জায়গার বিপরীতে বস্তা বস্তা টাকা পাওয়া যায় আর পেয়েছেও অনেকে তাই। আর যায় কোথা; মুহুর্তের মধ্যে সবাই রাস্তার পাশে অগ্রীম ডেভলপমেন্ট শুরু করে দিল স্থানীয়রা। সাথে বুদ্ধি দিয়ে সহযোগিতা করল রোডস এন্ড হাইওয়ের কতিপয় কমিশনখোর।  

জাকির হোসেন রনি, উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরোঃ

"ঝোঁপ বুঝে, কোঁপ মার" প্রাচীন এই প্রবাদটির উৎপত্তি উত্তরাঞ্চল। আর এই উত্তরাঞ্চল হতেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে "ছয়লেন" রাস্তার পাশে অবস্থানকারী মানুষেরা। রাস্তার কাজ শুরু হবার বেশ আগ হতেই চাউর হয়েছিল যে জায়গার বিপরীতে বস্তা বস্তা টাকা পাওয়া যায় আর পেয়েছেও অনেকে তাই। আর যায় কোথা; মুহুর্তের মধ্যে সবাই রাস্তার পাশে অগ্রীম ডেভলপমেন্ট শুরু করে দিল স্থানীয়রা। সাথে বুদ্ধি দিয়ে সহযোগিতা করল রোডস এন্ড হাইওয়ের কতিপয় কমিশনখোর। 

এখনও ছয়লেনের যেসব জায়গায় জায়গা অধিগ্রহণ শুরু হয়নি কিংবা শুরু হবে সেসব জায়গায় বিল্ডিং কিংবা শেড তুলে টাকা আদায়ের ধান্দা করছে ধান্দাবাজ ও কমিশনখোর ভূমিদস্যুরা। সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান । এই মহাসড়কের দু’ধারের জমি ও অবকাঠামোর মূল্য বেশী পাওয়ার লোভে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুরের রাস্তার পাশে জমির মালিকরা বিভিন্ন ধরণের অবকাঠামো নির্মাণ করছেন। নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা উপেক্ষা করে এখনও নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেছেন যারা নতুন অবকাঠামো তৈরী করছেন তাদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে টিম ক্রাইম ডায়রি সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে  নিশ্চিত  হয়েছে। দেখা গেছে,  টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন পর্যন্ত ১৯০ কি.মি ৬ লেনের কাজ শুরু হয়েছে। সেজন্য  জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছিল বেশ কিছুদিন আগ হতেই। ইতোমধ্যে বগুড়ার শেরপুর পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি দৃশ্যমান।  বগুড়া অঞ্চলে কাজ চলমান এবং পর্যায়ক্রমে তা রংপুরের দিকে এগিয়ে চলেছে।  ফলে,   মহাসড়কের পীরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর এলাকায় জমির মালিকরা অবকাঠামো ও জমির মূল্য বেশি পেতে সড়ক সংলগ্ন উভয়পাশে রাতারাতি সাইনবোর্ড সর্বস্ব পাকা ও আধা পাকা বাসা এবং নাম সর্বস্ব দোকান-মার্কেট নির্মাণ ও জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে চলেছেন। যদিও মহাসড়কের বিধিমালা অনুযায়ী সড়কের উপরে, নীচে বা পরবর্তী ১০ মিটারের মধ্যে কোনকিছু নির্মাণ বা স্থাপনা করা যাবে না মর্মে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিলেও তা উপেক্ষা করে অবৈধ নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছে ভূমিমালিকরা। টিম ক্রাইম ডায়রি পরিচয় গোপন রেখে একাধিক এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে।  এলাকাবাসী জানায় রোডস এন্ড হাইওয়ের কিছু কমিশনখোর ভূমিমালিকদের বুদ্ধি দিয়ে এমনটি করাচ্ছে। এরা ভূমিমালিকদের সাথে মোটা অংকের কমিশন চুক্তি করে নিয়েছে।  কমিশনখোর কর্মকর্তাদের নাম ঠিকানা জানতে চাইলে এলাকার কেউই তা দিতে রাজী হয়নি। তাদের বক্তব্য আপনারা তদন্ত করে খুঁজে বের করেন। জানা গেছে, জমির মূল্যের ৩ গুণ আর অবকাঠামোর মূল্যের ২ গুণ  বেশি করে টাকা  দেয়া হবে এমন খবরে চলছে এই নির্মাণ কাজের প্রতিযোগিতা।  

পীরগঞ্জের বড়দরগাহ থেকে দক্ষিণে খেদমতপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কি.মি এলাকা অধিগ্রহণের আগেই পুরাতন টিনের ছাউনি দিয়ে ঘরের চালা আর ঢালাইকৃত একতলা ও দ্বিতল ভবনের কাজ করা হয়েছে।  যেখানে আগে কিছুই ছিলনা। রংপুর এলাকার মহাসড়কের পাশ্ববর্তী  বড়দরগাহ, রাউতপাড়া, শুকানচৌকি, লালদীঘি, জামতলা, সোনাকান্দর, বাসস্ট্যান্ড, উজিরপুর, মজিদপুর, খেদমতপুর, তুলারাম মজিদপুর, আংড়া ব্রীজ, মাতারহাট ও ধাপেরহাটসহ বেশকিছু স্থানে রাতারাতি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বগুড়া হতে রংপুর পর্যন্ত যে জায়গাগুলোতে অধিগ্রহণ শুর হয়নি সেগুলো সবজায়গাতেই দৃশ্যমান নতুন স্থাপনা,মার্কেট কিংবা টিনের চালা। নিজের জমি নেইতো কি হয়েছে পরের জমি লিজ নিয়ে, টাকা উদ্ধার করে ভাগ পাওয়ার চুক্তি করেও দোকান,শেড কিংবা মার্কেট কিংবা বাড়ি তৈরির কথা জানিয়েছেন এলাকার অনেক বায়োজৈষ্ঠ্য ব্যক্তি। খাস জমিও নিজ নামে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত কঠোর অবস্থানে যাওয়া দরকার বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম