আরও ৪৩টি পণ্যে মাণ সনদ গ্রহন বাধ্যতামূলক করল বিএসটিআই

BSTI has made it mandatory to get quality certificates for 43 more products

আরও ৪৩টি পণ্যে মাণ সনদ গ্রহন বাধ্যতামূলক করল বিএসটিআই

প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ,বিশেষ প্রতিনিধিঃ

 নতুন ৪৩টি ভোগ্যপণ্যে বিএসটিআইয়ের মাণ সনদ গ্রহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২৫শে অক্টোবর, ২০২০ইং বিএসটিআই ভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনের (বিএসটিআই) ৩৪তম কাউন্সিল সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত ও অনুমোদিত হয়। বিএসটিআই’র এক প্রেস রিলিজে  সভার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে বিএসটিআই লো-ফ্যাট মিল্ক, ফ্লেভারড্ মিল্ক, আইস ললি, ন্যাচারাল মেহিদী, ডিসওয়াশিং লিকুইড, লিকুইড টয়লেট ক্লিনার, নেইল পলিস, গোল্ড (স্বর্ণ), পাওয়ার লুমে তৈরি কটন শাড়ি, প্যাসেঞ্জার কার টায়ার ও রিম, হলো ক্লে ব্রিক্স ও বক্স, পাওয়ার ট্রান্সফরমারসহ নতুন ৪৩টি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যকে বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা অনুমোদন করা হয়।

কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। কাউন্সিলের প্রথম সহসভাপতি ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, দ্বিতীয় সহসভাপতি ও শিল্পসচিব কে এম আলী আজম, সদস্য সচিব ও বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ড. মো. নজরুল আনোয়ার এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও, শিল্প, স্বরাষ্ট্র, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, অর্থ বিভাগ, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন।

কাউন্সিল সভায়, গুণগত শিল্পায়নের চলমান ধারা জোরদারে জেলা পর্যায়ে বিএসটিআই’র মান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি সম্বলিত ল্যাবরেটরির সুবিধার প্রসার, প্রাতিষ্ঠানিক জনবল বৃদ্ধি,দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ সুবিধা জোরদার, কর্তকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন, যাতায়াত ও প্রণোদনার সুযোগ বাড়ানো এবং হালাল খাদ্যের রপ্তানি বাড়াতে বিএসটিআই’র মান নির্ধারণী কার্যক্রম সম্প্রসারণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর তা সিদ্ধান্ত আকারে গৃহিত হয়।

জেলা পর্যায়ে বিএসটিআই’র অফিস সম্প্রসারণ ও সেবাদান কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে বিদ্যমান ৮টি বিভাগীয় অফিসের পাশাপাশি নতুন আরো ১৩টি আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের মাধ্যমে মোট ৬৪টি জেলায় কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তাবও এ সভায় অনুমোদিত হয়। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের বাইরে অবস্থিত ৪৩টি জেলায় মোবাইল কোর্ট, ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও সার্ভিল্যান্স পরিচালনার স্বার্থে প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে নিজস্ব অফিস স্থাপন এবং সীমিত জনবল দিয়ে তা চালানো হবে বলেও প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে হালাল পণ্য রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনার কথা।  এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিএসটিআইকে দ্রুত হালাল পণ্যের মান নির্ধারণ ও মান সনদ প্রদানের উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগ্যতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য উৎসাহিত করতে উন্নত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনাসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোরও আশ্বাস দেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য বাজারজাত করে ব্যবসায়ী নামধারী কিছু সুবিধাবাদী মানুষ টাকার পাহাড় গড়ার হীন কৌশল অবলম্বন করছে। তারা মেয়াদোত্তীর্ন শিশুখাদ্য, ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করে তাতে নতুন লেবেল লাগিয়ে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে ভোক্তা সাধারণকে প্রতারিত করছে। প্রতিমন্ত্রী এ ধরণের অপকর্মের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ নজরদারি, জরিমানা আদায় এবং অতিরিক্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। তিনি শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত বিদেশে প্রশিক্ষণ টিমে বিএসটিআই’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করারও পরামর্শ দেন।

শিল্পসচিব বলেন, বাংলাদেশে শিল্পায়নে চলমান ধারার সাথে তাল মিলিয়ে বিএসটিআই এর মান নির্ধারণী কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় অভ্যন্তরীণ বাজার হারানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাণিজ্যেও বাংলাদেশি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বিএসটিআই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বাড়াতে মানসম্মত প্রশিক্ষণ কারিকুলাম প্রণয়ন এবং দক্ষ প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন।  উল্লেখ্য সম্প্রতি ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা কোম্পানি নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই  সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করে পণ্যের গুনগত মাণ নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তাদের নিকট মানসম্মত পণ্য বিতরনে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা  পালন  করে জনগনের আস্থা অর্জন করেছে। 

ক্রাইম  ডায়রি // শিল্প বানিজ্য 

ক্রাইম  ডায়রি//