কর্মচারীদের বেতনের ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রেলের অডিটরের বিরুদ্ধে

ফিরে দেখাঃ রেলের দূর্নীতি

কর্মচারীদের বেতনের ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রেলের অডিটরের বিরুদ্ধে

কালিমুল্লাহ দেওয়ান রাজাঃ

তিনি রেলওেয়ের জুনিয়র অডিটর। ফুলে ফেঁপে বড় হয়ে গেছেন অন্য কোন আয়ের উৎস ছাড়াই। অবশেষে জানা গেল,জালিয়াতির মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন তিনি।  আর সেই অভিযোগে বাংলাদেশ রেলওয়ের জুনিয়র অডিটর ফয়সাল মাহবুবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটি চলমান ও আছে। রেলের কর্মকর্তা কর্মচারীরা আশা করছেন দোষী ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তি হবে। অনেকেই মনে করছেন, এমন দূর্নীতি আরও হয় কিনা তা যাচাই করা দরকার।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এ সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন মে মাসের ১২ তারিখে। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে ,  রেলওয়ের চট্টগ্রাম মহদনগরীর পাহাড়তলী অফিসের ডেপুটি ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজর অ্যান্ড প্রধান হিসাব অধিকর্তার কার্যালয়ের জুনিয়র অডিটর ফয়সাল মাহবুব। তিনি রেলওয়ের চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের হিসাবায়ন ইউনিটের অধীনে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা, উৎসব ভাতা, চিত্তবিনোদন ভাতা, অধিকাল ভাতা ইত্যাদি পরিশোধের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

এ সময় তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আইবাস++সিস্টেমে (একটি সফটওয়্যার) ভুয়া বিল দাখিল করে ইএফটির মাধ্যমে নিজের চারটি ব্যাংক হিসেবে প্রায় দুই কোটি টাকা জমা করে আত্মসাৎ করেছেন।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৭ মে রেলওয়ের বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী জাহেদ আরেফিন পাটোয়ারি তন্ময়কে দুই দফা বেতন ও বোনাসের টাকা হিসাবে দেওয়া হলেও তিনি একবার পেমেন্ট পেয়েছেন বলে জানান।

বিষয়টি অস্বাভাবিক হওয়ার কারণে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন। পরবর্তীতে আইবাস++সিস্টেম সম্পর্কে একজন বিশেষজ্ঞকে বিষয়টি যাচাই বাছাই করে সিস্টেমে সংরক্ষিত লেনদেনের তথ্য নিরীক্ষা করে বেশকিছু অসঙ্গতিপূর্ণ লেনদেন পাওয়া যায়।
প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে ভুয়া বিল দাখিল ও পাশের মাধ্যমে প্রায় দুই কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গতঃ,  ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৬ মে পর্যন্ত সময়ে তিনি এভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি এই টাকাগুলি আত্মসাৎ করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি  লিখিতভাবে তা স্বীকার করেন। এরপরই তাকে গত মে মাসেই  গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা এবং ১৯৪৭ সনের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম