আমদানী পণ্যে ওভার ইনভয়েস করে টাকা পাঁচার, ৬৪ হাজার কোটি টাকার অনুসন্ধানে দুদকঃ কড়া নজরদারীতে আল মুসলিম গ্রুপ

Al-Muslim Group under tight surveillance: ACC seeks Rs 64,000 crore for over-invoicing of imported goods

আমদানী পণ্যে ওভার  ইনভয়েস করে টাকা পাঁচার, ৬৪ হাজার কোটি টাকার অনুসন্ধানে দুদকঃ কড়া নজরদারীতে আল মুসলিম গ্রুপ

আর্থিক কিংবা গ্রুপ কোম্পানীর বিভিন্ন উইংসে টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তা - কর্মচারীরা তাদের টাকা হালাল করার চেষ্টা করছে। আবার কোম্পানীতে বিনিয়োগের কথা বললেও শেয়ার দেখিয়ে উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহ করে রাজস্ব বিধি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের স্পষ্ট বিধি লংঘন করছে কিছু প্রতিষ্ঠান। মুখে মিষ্টি কথা বলে তাদের  অর্থের উৎস সম্পর্কে সুন্দর বর্ননা দিলেও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দুদক ধরলে  এরা সঠিক উত্তর দিতে পারবেনা। আর গবেষণা প্রতিষ্টানটির ভাষ্য অনুযায়ী  এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই তাদের শেয়ার হোল্ডার কিংবা বিনিয়োগকারীদের টাকা পাঁচার করতে ইমপোর্ট করার নামে এভাবে ওভার ইনভয়েস এর মাধ্যমে তাদের টাকা পাঁচার করছে।

আতিকুল্লাহ আরেফিন রাসেলঃ

টাকা পাঁচার কিংবা রাজস্ব ফাঁকি ‍নানা কৌশল নিয়ে সদা ব্যস্ত অপরাধীরা। প্রশাসনিক নিয়ম যতভাবে পাল্টে তার চেয়ে দ্রুত গতিতে ধরন পাল্টায় অপরাধীরা। তাদের সাথে সহযোগীতা করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর গুলো কালোবিড়ালরা। ইদানিংকালে আমদানী পণ্যে নিয়ে ব্যবসার হার বেড়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যবসাকে পুঁজি করে অর্থ পাঁচারকারী চক্র ও রাজস্ব ফাঁকিবাজরা মাঠে নেমেছে জোরেসোরে। সম্প্রতি, বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য ওভার-ইনভয়েসের (বেশি দাম দেখানো) মাধ্যমে বছরে ৬৪ হাজার কোটি পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলে জানা গেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত
আন্তর্জাতিক একটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এই অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে আল-মুসলিম গ্র“পের ১৭৫ কোটি টাকা অর্থ পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানা যায়। এদিকে প্রায় অর্ধশত পোশাক কারখানা মালিক দুদকের নজরদারিতে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) গত বছরের ৪ মার্চ, ২০২০ইং একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে বলা হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়। বর্তমান বাজারদরে (৮৫ টাকায় প্রতি ডলার) এর পরিমাণ ৬৪ হাজার কোটি টাকা।

আর্থিক কিংবা গ্রুপ কোম্পানীর বিভিন্ন উইংসে টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তা - কর্মচারীরা তাদের টাকা হালাল করার চেষ্টা করছে। আবার কোম্পানীতে বিনিয়োগের কথা বললেও শেয়ার দেখিয়ে উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহ করে রাজস্ব বিধি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের স্পষ্ট বিধি লংঘন করছে কিছু প্রতিষ্ঠান। মুখে মিষ্টি কথা বলে তাদের  অর্থের উৎস সম্পর্কে সুন্দর বর্ননা দিলেও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দুদক ধরলে  এরা সঠিক উত্তর দিতে পারবেনা। আর গবেষণা প্রতিষ্টানটির ভাষ্য অনুযায়ী  এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই তাদের শেয়ার হোল্ডার কিংবা বিনিয়োগকারীদের টাকা পাঁচার করতে ইমপোর্ট করার নামে এভাবে ওভার ইনভয়েস এর মাধ্যমে তাদের টাকা পাঁচার করছে।

টাকা পাঁচার কিংবা রাজস্ব ফাঁকি ‍নানা কৌশল নিয়ে সদা ব্যস্ত অপরাধীরা। প্রশাসনিক নিয়ম যতভাবে পাল্টে তার চেয়ে দ্রুত গতিতে ধরন পাল্টায় অপরাধীরা। তাদের সাথে সহযোগীতা করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর গুলো কালোবিড়ালরা। ইদানিংকালে আমদানী পণ্যে নিয়ে ব্যবসার হার বেড়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যবসাকে পুঁজি করে অর্থ পাঁচারকারী চক্র ও রাজস্ব ফাঁকিবাজরা মাঠে নেমেছে জোরেসোরে। সম্প্রতি, বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য ওভার-ইনভয়েসের (বেশি দাম দেখানো) মাধ্যমে বছরে ৬৪ হাজার কোটি পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনটিতে ১৩৫টি উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশের গত ১০ বছরের (২০০৮-২০১৭) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মূল্য ঘোষণার গরমিল দেখিয়ে কীভাবে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়, সেই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ৩৫টি উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনামূলক চিত্রও দেওয়া হয়েছে। একটি দেশ অন্য দেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি করার সময় প্রকৃত মূল্য না দেখিয়ে হয়  কম না হয় বেশি দেখানো হয়। মূল্য ঘোষণা যেহেতু একটি বড় ফ্যাক্টর। সুতরাং মূল্য ঘোষনার সময়ই বাড়তি অংশের অর্থ বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়। জিএফআইর প্রতিবেদনটি আমলে নেয়  ‍দুদক। এরপর সংস্থাটির বিজ্ঞ ও চৌকস কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে। দুদক সুত্রে জানা গেছে, প্রতিবেদনটিতে অর্থ পাচারের পরিমাণ ও পাচারের পদ্ধতির বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও পাচারকারীদের নাম নেই। তবে তাদের শনাক্ত করতে দুদক চার সদস্যের একটি টিম গঠন করে। এরপরই পাচারকারীদের শনাক্ত করতে মাঠে নামার পরই বেশ কিছু তথ্য পায় দুদক। এরই মধ্যে তারা জানতে পারে পণ্য রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচার করেছে সাভারের পোশাক রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান আল-মুসলিম গ্র“পের একেএম নিটওয়্যার ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ১৭৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে। কিন্তু এই টাকা দেশে আসেনি। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান চলছে।

দুদক জানিয়েছে দেশের কতিপয় গার্মেন্টের মালিক ইনভয়েস জালিয়াতির মাধ্যমে বছরে ৬৪ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, ওই অভিযোগে আল-মুসলিম গ্র“পের বিরুদ্ধে ১৭৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ ছিল। সেটিও আমাদের কমিটি অনুসন্ধান করছে। এসব বিষয়ে এনবিআর আমাদের সহযোগিতা করছে। আমরা এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট থেকেও তথ্য নিয়ে এ বিষয়ে কাজ করছি।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে দুদক সচিব সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই অভিযোগ যাচাই-বাছাই করছে দুদক। এদিকে ওভার ইনভয়েসে অর্থ পাচার অনুসন্ধান সম্পর্কে দুদক সচিব ড. মুহা. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেছেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা কম দামের পণ্য ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে বেশি দাম দেখিয়ে অর্থ পাচারের ঘটনা অনুসন্ধান করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে দুদক সুত্রে জানা গেছে।

ক্রাইম ডায়রি// দুদক বিট